গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়?
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এই বিষয়ে অনেকেরই সঠিক ধারণা থাকে
না।গর্ভাবস্থায় মায়ের যত্ন ও সঠিক পরিমাণে পুষ্টি গ্রহণ শিশুর বুদ্ধিমত্তার
উন্নতিতে বিশেষ ধরনের প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় মায়ের সুষম খাদ্যের নির্বাচন ও
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে অনেক সহায়তা করে অর্থাৎ
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য এবং বুদ্ধিমত্তার বৃদ্ধির জন্য
মায়ের খাদ্য তালিকার গুরুত্ব অপরিসীম।
গর্ভাবস্থায় শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অর্থাৎ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য মায়ের সুষম খাদ্য গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় মায়ের খাওয়ার মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও মস্তিষ্কের বিকাশ সাধিত হতে পারে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়?
- গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
- গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি গ্রহণের গুরুত্ব
- গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ
- শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রোটিনের ভূমিকা
- শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ফলমূল ও সবজির প্রভাব
- পূর্ণ শস্য মস্তিষ্কের শক্তি ও প্রকাশের জন্য অপরিহার্য
- মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বীজের কার্যকারিতা
- শিশুর মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস
- FAQ/সাধারণ প্রশ্নোত্তর
- লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়?
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এই সম্পর্কে যারা প্রথমবার গর্ভধারণ করেন তারা অনেকেই জানেন না।গর্ভাবস্থায় মা সঠিক পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করলে শিশুর বুদ্ধিমত্তার উন্নতি ও
মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গর্ভস্থ শিশুর সঠিক
বুদ্ধিমত্তার বিকাশের জন্য ওমেগা-৩, ফ্যাটি এসিড ও DHA অতি প্রয়োজনীয়
উপাদান যা মাছ আখরোট চিয়া সীড ও ফ্লাক্স সিডে পাওয়া যায়। এছাড়াও
ফলিক অ্যাসিড যা সবুজ শাকসবজি ও সাইট্রাস ফল থেকে পাওয়া যায়। ফলিক অ্যাসিড
থেকে পাওয়া পুষ্টি উপাদান শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
এছাড়াও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে প্রোটিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ যা ডাল মাংস
দুধ ও ডিমে পাওয়া যায়। ভিটামিন বি১২ এবং আয়রন যা মাছ মাংস ডিম এবং
সবুজ শাকসবজিতে পাওয়া যায়। ভিটামিন বি১২ এবং আয়রন শিশুর মস্তিষ্কের
কার্যকারিতা ও ও স্নায়ু সিস্টেমের গঠন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে। পর্যাপ্ত
পরিমাণে পানি পান করা সঠিক পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহণ করা সুষম খাদ্য গ্রহণ করা
মায়ের শরীরের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকার ফলে
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি গ্রহণের গুরুত্ব
গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি গ্রহণ অতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ গর্ভাবস্থায় মা সঠিক
পরিমাণে পুষ্টি গ্রহণ করলে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করে।
গর্ভধারণ করার প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত মায়ের শরীরে পুষ্টির চাহিদা দিন
দিন বাড়তে থাকে কারণ শিশুর মস্তিষ্ক হার হৃদপিন্ড এবং অন্যান্য অঙ্গ গুলোর
বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করতে হয়। মায়ের শরীরে সঠিক পরিমাণে
পুষ্টির অভাব শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং শারীরিক বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা সাধন করতে পারে।
এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মায়ের ফলিক এসিডের অভাবে শিশু সঠিক মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা
সৃষ্টি করতে পারে,আর গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রোটিনের অভাবে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক
বৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আয়রন ও ক্যালসিয়ামের সঠিক পরিমাণে গ্রহণ
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে শক্তি ও স্নায়ুতন্ত্রের ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে
তোলে যা গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতএব,
গর্ভাবস্থায় মায়ের সঠিক পরিমাণে পুষ্টি ও সুষম খাদ্য গ্রহণ শুধু মায়ের জন্যই
নয় বরং গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ
গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, সংবেদনশীল ও দ্রুত
পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া। মায়ের গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যে শিশুর
মস্তিষ্কের মূল কাঠামো তৈরি হতে শুরু করে এবং পরবর্তী সময়ে স্নায়ুতন্ত্রের
সেলগুলোর মধ্যে সংযোগ তৈরি হতে থাকে। এই সময় গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের
স্নায়ুতন্ত্রের এবং স্নায়ু সংযোগ গুলোর গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে কারণ এগুলো শিশুর ভবিষ্যতে তার চিন্তাভাবনা, শেখার ক্ষমতা ও স্মৃতির গঠন
নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
গর্ভধারণ করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়?একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশু জন্য মস্তিষ্কের বিকাশ
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকর ও স্বাভাবিক বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি
গ্রহণ করা অপরিহার্য যেমন-ওমেগা-৩, ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ডি, আইরন এবং ফলিক
অ্যাসিড ইত্যাদি। এসব উপাদান গুলো গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের সেলগুলো গঠনের জন্য
এবং স্নায়ু সিস্টেমের কার্যক্রমে বিশেষভাবে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
গর্ভাবস্থায় মায়ের সঠিক পরিমাণে পুষ্টির গ্রহণের ফলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের
বিকাশ সুস্থ্য ও স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হলে, শিশুর মানসিক ক্ষমতা,
বুদ্ধিমত্তা,শেখার গতি এবং অন্যান্য স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে
উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। তাই গর্ভাবস্থায় মায়ের সঠিক খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা
ইত্যাদি গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে।
শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রোটিনের ভূমিকা
শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রোটিনের ভূমিকা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রোটিন হলো শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্যতম একটি মৌলিক
উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রোটিন হলো শিশুর মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের সেল গঠনে
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এবং মস্তিষ্কের কোষ গঠনের সঠিক ও স্বাভাবিক
কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে।
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের কোষ গুলোর
বিভাজন এবং কোষ গুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন মূলত প্রোটিনের মাধ্যমে সম্ভব
হয় যা ভবিষ্যতে শিশুর চিন্তাভাবনা ও স্মৃতির বিকাশে অত্যন্ত সহায়ক।এছাড়াও প্রোটিন গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ু সিস্টেমের উন্নয়নে কার্যকরী উপাদান
যা শিশুর মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে বার্তা পরিবহনের প্রক্রিয়া কার্যকর করে তোলে
এবং শিশুর স্নায়ু সংযোগের গঠন প্রক্রিয়া শক্তিশালী করে।
গর্ভাবস্থায় মায়ের
শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিনের গ্রহণ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে অত্যন্ত সাহায্য করে এবং
এটি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য, স্মৃতি ও কোন কিছু শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা
করে। তাই গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিমাণে পুষ্টি গ্রহণ শিশুর মানসিক বিকাশে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুনঃ
শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ফলমূল ও সবজির প্রভাব
গর্ভস্থ শিশুর সঠিকভাবে মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য ফলমূল ও শাক সবজির গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রয়েছে। কারণ ফলমূল ও শাকসবজি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেলস, ফাইবার ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দিয়ে তৈরি। গর্ভাবস্থায় মা ফলমূল ও সবজি গ্রহণ করলে তার
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এ ভিটামিন সি ভিটামিন ই পটাশিয়াম এবং অন্যান্য
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পৌঁছায় যা শিশুর মস্তিষ্কে সুস্থ কর ও
স্বাভাবিক বিকাশে সহায়তা করে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ভিটামিন সি শিশুর
স্নায়ুতন্ত্রের গঠনে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের সেলগুলোর গঠন এবং কার্যক্ষমতা
বৃদ্ধি করে।এছাড়াও ভিটামিন এ শিশুর মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি এবং স্নায়ুর সংযোগ গঠনে
বিশেষভাবে সহায়তা করে এবং ভিটামিন ই গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের কোষগুলোকে
এবং অক্সি ডেটিভ স্টেজ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
সবজিতে রয়েছে
ফোলেট গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ু সিস্টেম জন্য অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এইসব
খাবারে থাকা ফাইবার শিশুর হজমের উন্নতি সাধন করে যার ফলে শিশুর শরীর ও
মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করতে পারে। গর্ভাবস্থায় মা নিয়মিত ফলমূল ও শাকসবজি
খেলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক আরো তীক্ষ্ণ এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে যা তাদের
ভবিষ্যতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
পূর্ণ শস্য মস্তিষ্কের শক্তি ও ফোকাসের জন্য অপরিহার্য
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের শক্তি এবং ফোকাস বজায় রাখতে পূর্ণ
শস্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।পূর্ণ শস্য যেমন-ব্রাউন রাইস,ওটস, কুইনোয়া
এবং শিশুর মস্তিষ্কের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ধীর গতির শর্করা সরবরাহ করে
থাকে যা শিশুর মস্তিষ্কের শক্তি ও ফোকাস দীর্ঘ সময় ধরে বজায় রাখতে সাহায্য
করে। এসব শস্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা শিশুর শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ
ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে ফলে শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং শিশুর মনোযোগ
দীর্ঘ সময় ধরে কার্যকরী থাকে।
পূর্ণ সর্ষে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং মিনারেল শিশুর মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা
বাড়াতে সাহায্য করে যা ভবিষ্যতে শিশুর চিন্তাভাবনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং
কনসেনট্রেশন উন্নত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এসব সরষে
থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে
এবং শক্তিশালী করে তোলে। এসব উপাদান নিয়মিত সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে শিশুর
শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ব্যাপক উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। অতএব, গর্ভস্থ শিশুর
মস্তিষ্কের শক্তি ও ফোকাসের জন্য পূর্ণ শস্য একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে
কাজ করে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বীজের কার্যকারিতা
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বীজ হলো একটি অত্যন্ত কার্যকরী
উপাদান। যেমন-চিয়া সিড ফ্ল্যাক্স সিড এবং কুমড়ো সিড মস্তিষ্কের জন্য
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ
করতে বিশেষভাবে সহায়ক। ওমেগা-৩ এবং ফ্যাটি এসিড গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের কোষ
গুলোর গঠন শক্তিশালী করে এবং স্নায়ু সিস্টেমের কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য
করে যার ফলে শিশু শেখার ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
ভিটামিন ই শিশুর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে একটি শক্তিশালী
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কার্য সম্পাদন করে থাকে যা শিশুর মস্তিষ্কের সেল ও কোষ
গুলোকে ড্যামেজ হওয়া থেকে সুরক্ষা প্রদান করে এবং কোষ গুলোর ক্ষয় রোধ
করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বীজগুলোতে থাকা বিভিন্ন ধরনের মিনারেল শিশুর
মস্তিষ্কের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
এসব উপাদান
গুলো শিশুর মস্তিষ্কের কোষের কার্যক্ষমতা এবং মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী
স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য উপাদান। অতএব বীজগুলো গর্ভস্থ শিশুর
মস্তিষ্কের সুরক্ষা এবং শক্তির জন্য একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পুষ্টিকর উপাদান,
যা গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরী।
শিশুর মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের জন্য শর্করা একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শক্তির
উৎস। গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রধান শক্তির উৎস হল গ্লুকোজ যা
সাধারনত শর্করা থেকে পাওয়া যায়। শর্করা শিশুর মস্তিষ্কে কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে
বিশেষভাবে সহায়ক এবং এটি মস্তিষ্কের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করার জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
যখন একটি শিশুর শরীর শর্করা গ্রহণ করে তখন সেই শর্করা দ্রুত শিশুর
মস্তিষ্কে পৌঁছায় এবং শিশুর মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে
যা শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।তবে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য শর্করা গ্রহণের সঠিক উৎস নির্বাচন করা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাকৃতিক শর্করার উৎস যেমন-ফলমূল পূর্ণশস্য এবং শাকসবজি
শিশুর মস্তিষ্কের জন্য ভীষণ উপকারী কারণ এগুলো ধীরে ধীরে শিশুর মস্তিষ্কে
গ্লুকোজের রূপান্তরিত হয়। চিনি যুক্ত বা প্রক্রিয়াজাত শর্করা গর্ভস্থ
শিশুর মস্তিষ্কের জন্য তেমন একটা উপকারী উপাদান নয় কারণ এগুলো খুবই দ্রুত
গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করে দেয় এবং পরে তা দ্রুতই কমে যায় যা শিশুর
ভবিষ্যতে মনোযোগ বা স্মৃতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আরো পড়ুনঃ
FAQ/সাধারণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃগর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিড, ডিম, বাদাম এবং অ্যাভোকাডো
খাওয়া গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়াও ফলমূল ও
শাক সবজি শিশুর মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃগর্ভাবস্থায় ডিম কেন খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ ডিমের মধ্যে রয়েছে কলিন নামক এক ধরনের বিশেষ উপাদান যা শিশুর
মস্তিষ্কের কোষ গুলোর গঠন ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কলিন শিশু
ভবিষ্যতের চিন্তাভাবনা ও শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক । তাই গর্ভাবস্থায় ডিম
খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্নঃফলমূলের মধ্যে কোনটি বাচ্চার মস্তিষ্কের জন্য ভালো?
উত্তরঃ কলা আপেল কমলা এবং বেরি শিশু মস্তিষ্কের জন্য বিশেষ উপকারী। এই ফলগুলোতে
থাকা ভিটামিন সি পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোর
প্রদান করতে ও শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃগর্ভাবস্থায় শাকসবজি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
গর্ভাবস্থায় মায়ের ব্রকলি পালং শাক এবং গাজর খাওয়া গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের
জন্য ভীষণ কার্যকরী উপাদান এসব সবজিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং আয়রন
শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে। শাকসবজি গর্ভস্থ শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
সহায়তা করে।
প্রশ্নঃগর্ভাবস্থায় পানি পান করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
কারণ এটি গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের কোষগুলো কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গ্রহণের ফলে শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা নিশ্চিত
থাকে।
প্রশ্নঃগর্ভাবস্থায় প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে কি দূরে থাকা উচিত?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় প্রক্রিয়াজাত খাবার চিনিযুক্ত পানীয় এবং বিভিন্ন ধরনের
ফাস্টফুড থেকে বিরত থাকা উচিত। এগুলো গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের জন্য কোনভাবেই
সহায়ক নয় বরং শিশু স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়?
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় আপনারা অনেকেই জানেন না বা
অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস শিশুর
মস্তিষ্কের বিকাশের অত্যন্ত সহায়ক। গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন
ভিটামিন মিনারেল ফ্যাটি এসিড এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩ থাকা উচিত যা শিশুর
শারীরিক ও মানসিক বিকাশে জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রিয় পাঠক, আশা করি এই কনটেন্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং এই কনটেন্টটি পড়ে
আপনারা উপকৃত হতে পারবেন। যদি এ কনটেন্টি পড়ে আপনি উপকৃত হন তবে এটি আপনার
বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনের কাছে শেয়ার করতে পারেন যাতে তারা এই কনটেন্টি
পড়ে উপকৃত হতে পারে।
বিডি টিপস কর্নারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url